আধুনিক তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহক সেবা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা পরিবার। ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি, জেএসসি-এসএসসি-এইচএসসি’তে রেজিস্ট্রেশন, পরীক্ষার ফর্ম পূরণ, ফলাফল প্রকাশ, পুনঃনিরীক্ষা, ই-বুক, নিয়োগের সার্বিক কার্যক্রম, প্রশাসনিক আদেশ-নির্দেশ, সার্কুলারসহ অধিকাংশ কার্যক্রম এখন অনলাইনে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এ ধারা প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ও জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের প্রতিফলন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বুধবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অনলাইন ইএসআইএফ ও ইএফএফ চালুকরণ এবং গত এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ‘টপ টুয়েনটি’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ফাহিমা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর নোমান উর রশীদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (মাধ্যমিক) এ এস মাহমুদ বক্তৃতা করেন। মন্ত্রী বলেন শিক্ষা পরিবারের বিভিন্ন কার্যক্রম তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সহজ, দ্রুতকরণ, স্বল্প ব্যয়সম্পন্ন এবং দুর্নীতিমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বুধবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে যুক্ত করা হলো জেএসসি-এসএসসি-এইচএসসি’তে রেজিস্ট্রেশন ও পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপ অনলাইন ব্যবস্থা। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও শিকদের শ্রম, কষ্ট ও হয়রানি বহুলাংশে কমে আসবে। তিনি এ কার্যক্রম সব ক’টি শিক্ষা বোর্ডে গ্রহণ করার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সংস্কারে বর্তমান সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন রাতারাতি করার কোন বিষয় নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন শিক্ষা পরিবারের সর্বস্তরে বর্তমানে যেসব কাজ হচ্ছে তার প্রতিটি ক্ষেত্রে আসল লক্ষ্য শিক্ষানীতির যথাযথ বাস্তবায়ন। শিক্ষানীতির মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি বাস্তবায়ন সময় সাপে বিষয়। তিনি বলেন ইতোমধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা সমতা শুধু অর্জিতই হয়নি, তা টেকসই স্তরে উন্নীত হয়েছে। এবারের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীদের সংখ্যা এক লাখ ৩৭ হাজারের অধিক। দেশের শ্রেষ্ঠ শিকদের মানসম্পন্ন শ্রেণি পাঠদান এখন বিটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে, ১৭টি মোবাইল কম্পিউটার ল্যাব ও একটি মোবাইল বিজ্ঞান ল্যাব দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘুরে ঘুরে কম্পিউটার ও বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারে ভূমিকা রাখছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শারীরিক-মানসিক শাস্তি বন্ধের কার্যক্রম চলছে। তিনি শিক্ষা বোর্ডসহ সকল স্তরের কর্মকর্তাদেরকে আরো স্বচ্ছতা, সততা ও আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদানের আহ্বান জানান।
তারা এখন তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বসেই ইন্টারনেটে ইএসআইএফ (ইলেক্ট্রনিক স্টুডেন্ট ইনফরমেশন ফরম) ফরম ফিলআপ করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে সেন্ড করবে এবং বোর্ড তা ডাউনলোড করে একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর বসিয়ে দেবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বসেই তা ডাউনলোড করা যাবে। ইএফএফ (ইলেক্ট্রনিক ফরম ফিলআপ) পদ্ধতির মাধ্যমে এখন থেকে রেজিস্ট্রেশন করা ছাত্রছাত্রীদের মধ্য হতে অনলাইনে ফরম ফিলআপযোগ্য ছাত্রছাত্রীদের নামের তালিকা বোর্ডে প্রেরণ করতে হবে এবং তাদের বিপরীতে ফরম ফিলআপের টাকা বোর্ডের একাউন্টে সোনালী ব্যাংকের যে কোন শাখায় জমা দিতে হবে। ফরম ফিলআপ করা ছাত্রছাত্রীদের এডমিট কার্ড সংগ্রহ করা যাবে।
জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ে ৫৫,৩৭৪ জন অনুপস্থিত থাকার ব্যাখ্যা: বুধবার জেএসসি ও জেডিসি পরীার প্রথম দিনে বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ে সারাদেশে ৫৫,৩৭৪ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, গতবছরের জেএসসি/জেডিসি পরীায় এক বিষয়ে ফেল করা ১,৬১,১৮৫ জন, দুই বিষয়ে ফেল করা ৭৩,৭১১ জন এবং তিন বিষয়ে ফেল করা ১৭,১৯২ জন মোট ২,৭৪,৩৪৯ জন শুধু এবার তাদের ফেল করা বিষয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। সুতরাং উল্লিখিত অনুপস্থিত ৫৫,৩৭৪ জন পরীক্ষার্থী প্রকৃতপক্ষে ঝরেপড়া সংখ্যা নয়। |