আলাউদ্দিন রনি, মাধবপুর:
আধুনিক প্রযুক্তিতে সবজি চাষের সফল কৃষক মাধবপুরের আমজাদ খান। স্বপ্নের পথ চলার সিঁড়ি বেয়ে এলাকায় সবজি বিপ্লব ঘটিয়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছেন তিনি। বিষমুক্ত টমেটো চাষ করে অল্প সময়েই নিজের ভাগ্য ফিরিয়েছেন তিনি। এখন সবজি চাষের উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছেন মাধবপুর উপজেলা চাষীদের মাঝে। আমজাদ খানের কৃষি খামারে এখন ৩০ জন লোক কাজ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল টমেটো আবাদ করে ব্যবসা করে লোকসান দিয়ে দিশেহারা আমজাদ এখন সবজি চাষ করে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তার খামারে উত্পাদিত টমেটো এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে রফতানি হচ্ছে। উত্পাদিত টমেটোর গুণগত মান ভালো ও বিষমুক্ত হওয়ায় খামার থেকেই রফতানিকারকরা টমেটো সংগ্রহ করে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর জন্য খামারেই কার্টনে প্যাকেট ও প্রক্রিয়াজাত করা হয়। মাধবপুর পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের হরমুজ আলীর ছেলে আমজাদ খান ১৯৮৯ সালে এইচএসসি পাস করে কীটনাশক ও বীজ ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু তার ব্যবসায় সফলতা আসেনি। ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েন তিনি। এর প্রায় ৫ বছর পর বিভিন্ন মৌসুমী সবজি চাষের মাধ্যমে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। ২০০৭ সালে তার পৈতৃক ২০ শতক জমিতে উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের টমেটো চাষ করে লাভ হয়। এরপর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা চৌমুহনী ইউনিয়নে গোপীনাথপুর গ্রামের মাঠে ৬ একর জমি লিজ নিয়ে একটি কৃষি খামার গড়ে তোলেন। প্রথম বছর চায়না তরমুজ, শশা, টেমেটো ও লাউ চাষ করে আশানুরূপ সাফল্য পান। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ করে পুরো ৬ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল কনক জাতের টমেটো চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন। স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছেন এই উদ্যমী কৃষক। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, খামারের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন থোকা থোকা লাল-সবুজ টমেটোর সমাহার। ২০ জন শ্রমিক জমি থেকে টমেটো সংগ্রহ করছেন। আর ১০ জন শ্রমিক ৫/১০ কেজি করে টমেটো কার্টনে সুন্দর করে প্যাকেটজাত করছেন। জিজ্ঞেস করতে শ্রমিক মুর্শেদ মিয়া জানান, চট্টগ্রাম থেকে এগ্রি কনসার্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা টমেটো নিতে ট্রাক নিয়ে এসেছে। চট্টগ্রাম থেকে এগুলো সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় রফতানি করা হবে। খামারের মালিক আমজাদ খান জানান এ মৌসুমে টমেটো চাষ করে উত্পাদনে যেতে প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়। ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় এরই মধ্যে প্রায় ৪০ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করা হয়েছে। খামার থেকেই প্রতি মণ টমেটো ১৬শ’ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তা আতিকুল হক জানান, আমজাদ খানের সবজি খামার এখন এলাকার কৃষকরা মডেল হিসেবে দেখছেন।
(Source: Amar Desh)
(Link: http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/01/24/184444#.UQC_baznGqA)
|