মহেশখালীতে বনবিভাগের সংরতি সামাজিক বনায়নের পাহাড় নিধন করে চলছেই প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা। বনবিভাগের যোগসাজেসে ভূমিদস্যুরা নির্বিচারে এসব পাহাড় নিধন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাহাড় নিধন করতে গিয়ে ভূমিদস্যুরা অবাধে সাবাড় করছে সরকারী সৃজিত সামাজিক বনায়ন। বনবিভাগের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজসে গত ১০ বছরে মহেশখালীতে প্রায় ৫ হাজার একর বনভূমি বেদখল করে নিয়েছে ভূমিদস্যুরা। নির্বিচারে পাহাড় ও বনায়ন নিধন হওয়ায় উপকূলীয় দ্বীপ মহেশখালীর পরিবেশ বিপর্যয়ের মারাত্মক আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকি নিয়ে দিনাতিপাত করছে উপজেলার দু’লাধিক মানুষ। এব্যাপারে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
উপকূলীয় ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রশীদ আহামদ চেীধুরী বলেন,‘ প্রতিনিয়ত পাহাড় কাটার কারণে উপকূলীয় দ্বীপ হিসেবে মহেশখালী জলবায়ু হুমকিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে। আমাদেরকে সামাজিক ও প্রশাসনিক ভাবে পাহাড় কাটা প্রতিরোধ করতে হবে।’
হোয়ানক ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল করিম চৌধুরী বলেন,‘ পাহাড় কাটা আমাদের সকলের জন্য হুমকি। তাই ব্যক্তিগত ভাবে সচেতন হয়ে পাহাড় কাটা থামাতে হবে।
বিগত কয়েক বছর পূর্বে উপজেলার বহুল আলোচিত কালারমারছড়া ইউনিয়নের ইউনুছখালীতে ভূমিকম্পে দেবে যাওয়া সুউচ্চ পাহাড়টি একশ্রেনীর ভূমিদস্যুরা দিন-রাত মাটি কেটে পানের বরজ তৈরির জন্য সমতল ভূমিতে পরিণত করছে। একই নিয়মে অন্যান্য পাহাড় গুলি কাটা অব্যাহত থাকলে আবারো পাহাড় ধ্বসের মত ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসনিক ভাবে এসব পাহাড় কাটা বন্ধ করার দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালারমারছড়া ইউনিয়নের ইউনুছখালী হাই স্কুল সংলগ্ন পূর্ব পাশে শাপলাপুর বনবিটের আওতাধীন ১২ নং পাহাড় মৌজায় স্থানীয় ইউনুছখালী ও শাপলাপুরের ষাইটমারা,ছোট মহেশখালী মুদিরছড়া এলাকায় অবাধে পাহাড় কাটার এ নির্মম দৃশ্য চোখে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, এলাকার প্রভাবশালী মহল সরকারী সৃজিত ২০০৩-০৪ সালের সামাজিক বনায়ন ও পাহাড় কেটে পানের বরজ বানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বনাবিভাগের কর্মকর্তাকে প্রতিটি পান বরজের জন্য ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা উৎকোচ দিয়ে পার্শ্ববর্তী পাহাড় কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হোয়ানক,বড়মহেশখালী, কালারমারছড়া, শাপলাপুর, ছোট মহেশখালীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে রাত-দিন নির্বিচারে চলছে পাহাড় কাটা। পাহাড় কাটতে গিয়ে সরকারী সামাজিক বনায়নের সেগুন, গর্জন, শালসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ সাবাড় করছে ভূমিদস্যুরা। ভূমিদস্যুরা এসব সুউচ্চ পাহাড় কেটে পানের বরজ, তরি-তরকারী খেত তৈরি করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম কাউছার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যাপক হারে পাহাড় কাটার অভিযোগ এখনো আমার কাছে আসেনি; খোঁজ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
|