নুরুল আলম, মিরসরাই (চট্টগ্রাম):
দুই দিন আগে থেকে মিরসরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে দাওয়াত দেয়া হয়। মেজবানের জন্য জবাই করা হয়েছে ১১০টি গরু, ৮০টি ছাগল ও ১০ মণ মুরগি। মেজবানের কাজে দায়িত্বে ছিলেন প্রায় ১৮০০ কর্মচারী। প্যান্ডেল তৈরি করা হয় ৬টি। স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বে ছিলেন ১১০০ কর্মী। রান্নার জন্য চুলা তৈরি করা হয় ৩০০। একসঙ্গে ১০ হাজার ২০০ মানুষ খাওয়ানো হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা। আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত ছিলেন শতাধিক পুলিশ ও আনসার। এমন ব্যতিক্রমী মেজবান অনুষ্ঠিত হয়েছে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের শান্তিরহাট এলাকায়। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে মেজবান শুরু হয়। উপজেলার জামালপুরে মরহুম হাজী শাহ আলমের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে বিশাল এই আয়োজন করেন তার দুই ছেলে আবুধাবী চেম্বার অব কমার্সের সদস্য ফখরুল ইসলাম (খান) ও বারইয়ারহাট পৌর কমিশনার নিজাম উদ্দিন। বিশাল এ আয়োজনকে ঘিরে পুরো উত্সবমুখর পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। বিষয়টি বর্তমানে ‘টক অব দ্য মিরসরাই’তে পরিণত হয়েছে।
আয়োজক ফখরুল ইসলাম (খান) জানান, মেজবান অনুষ্ঠানে একসঙ্গে ১০ হাজার ২০০ লোকের খাবার পরিবেশন করা হয়। ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক ৬টি প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ এবং খাবার পরিবেশনের প্রয়োজনীয় পরিবেশক নিয়োগ করা হয়। এছাড়াও রান্না, বিভিন্ন কাজে পৃথক পৃথক কমিটিতে অসংখ্য লোক নিয়োগ করা হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে এ আয়োজন চলে।
তিনি আরও জানান, মেজবানে ১১০টি গরু জবাই করা হয়েছে। এছাড়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য ছিল ৮০টি খাসি ও ১০ মণ মুরগি। বাবার ইছালে ছাওয়াবের উদ্দেশ্যে মেজবানিতে হতদরিদ্র থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ অংশ নেয়। উপজেলার সব এতিমখানা ও বিভিন্ন স্পটে মানুষের আসার সুবিধার্থে অর্ধ শত গাড়ি দেয়া হয়েছিল। এ মেজবানিতে প্রায় ৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে তিনি জানান।
মেজবান পরিচালনা কমিটির সদস্য মাওলানা শহিদ উল্লাহ ও মাওলানা এনামুল হক নিজামী জানান, দলমত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তি, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, আত্মীয়স্বজনসহ হাজী শাহ আলমের শুভাকাঙ্ক্ষীরা মেজবানে অংশ নেন। মিরসরাই ছাড়াও সীতাকুণ্ড, রামগড়, ফটিকছড়ি, রাউজানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক মেজবানে আসেন। স্থানীয়রা বলেন, মরহুম হাজী শাহ আলমের এ মেজবান চট্টগ্রামের মধ্যে যাবতকালের সবচেয়ে বড় আয়োজন।
বারইয়ারহাট পৌর মেয়র আবু তাহের ভূঁইয়া জানান, এবারই প্রথম সবচেয়ে বড় মেজবানের আয়োজন করছে। এর আগে মিরসরাইয়ের ইতিহাসে এত বড় মেজবান কেউ আয়োজন করেনি। মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান জানান, বিশাল এ মেজবানিতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন ছিল। অনুষ্ঠানে দায়িত্বরত মিরসরাই থানার এএসআই বেলায়েত হোসেন জানান, শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ৭৫ আনসার ও ৫০ পুলিশ সদস্য নিয়োজিত ছিল।
প্রসঙ্গত মিরসরাইয়ের বিশিষ্ট দানবীর ও সমাজসেবক হাজী শাহ আলম ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর থেকে তার ছেলেরা মেজবানির আয়োজন করে আসছে।
(Source:AmarDesh) (Link:http://www.amardeshonline.com/pages/details/2013/02/03/186081#.UQ3vc_LnGqA)
|