এস.এম.মোরশেদ মুন্না, নাজিরহাট : ২০০৩ সালে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে সংযোজিত (ই ও সি) জরুরি প্রসূতি সেবা ইউনিট দীর্ঘদিন ধরে একাধিক সমস্যায় জর্জরিত। পাহাড় সম সমস্যা থাকার পরও জরুরি প্রসূতি সেবা ব্লকটি হাসি ফুটাতে সক্ষম হয়েছে নারীদের। বিশেষ করে গরীব মায়েরা নাম মাত্র খরচে অধিক ভাল চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের ই ও সি বিভাগ হতে। নিত্যদিন অনেক প্রসূতির ভিড় দেখা যায় ই ও সি বিভাগে। রোগীর বেশ ভিড় থাকার পরও হাসপাতালটির একাধিক সমস্যার কোন সমাধান হচ্ছেনা। উপরন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে নানান সমস্যার কথা জানানো হলেও কিছুর কিছুই হচ্ছেনা। প্রায় এক যুগ আগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে সংযোজিত দ্বিতল বিশিষ্ট ই ও সি বিভাগ নানাবিধ সমস্যায় থাকায় চিকিৎসা সেবা প্রদানে কর্মরত ডাক্তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জনবল সংকটসহ ই ও সি বিভাগে নূন্যতম ৪টি লেবার টেবিলের স্থলে আছে মাত্র ২টি তাও ভাঙ্গা। ফলে লেবার টেবিল সংকটে সংকটময় মুহূর্তে মায়েদের মেঝেতে রেখে সিজার করতে হয়। দুটি ও টি (অপারেশন থিয়েটার) টেবিলের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিকল অবস্থায় রয়েছে ১টি টেবিল। নূন্যতম দুজন অ্যানেসথেসিষ্ট ( অজ্ঞান বিষয়ক ডাক্তার) এর মধ্যে আছে ১ জন। ১টি মাত্র কটারি মেশিন (রক্তক্ষরণ বন্ধ করার যন্ত্র) দিয়ে দুজন ডাক্তারকে চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে। ডাক্তারদের বসার পর্যাপ্ত সুবিধা নেই। রোগীদের সহযোগিতায় যা পাওয়া যায় তা দিয়ে চলে আয়াদের বেতন। কোন মতে জোড়া-তালি দিয়ে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে কর্মরতরা।
জানা গেছে, নাজিরহাটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ই ও সি বিভাগ হতে গত জানুয়ারি মাসে প্রায় ৩০০ জন রোগীকে স্বাভাবিক ডেলিভারি এবং ৩০ জন রোগীকে সিজার ডেলিভারি করানো হয়। চলতি মাসের ২৩ ফেব্রোয়ারি পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন রোগীকে স্বাভাবিক ডেলিভারি এবং ১৮ জন রোগীকে সিজার ডেলিভারি করানো হয়। ডাক্তাররা জানান অনেক সময় দৈনিক ১৫ হতে ১৬ জন রোগীকে ডেলিভারি করতে হয় । এছাড়া গড়ে দৈনিক প্রায় ৩০ জন রোগীকে প্রসব পূর্ব সেবা প্রদান করছেন ই ও সির কর্মকর্তারা।
পাইন্দং হতে আসা রোগীর অভিবাবক খাতুনারা বেগম জানান, অনেক ভাল আছি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ই ও নি বিভাগের সার্জন ডা. দিলশান আরা হাবিব জনান, ই ও সি বিভাগটি হচ্ছে ফটিকছড়িবাসির জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। তবে রোগীর চাহিদা অনুপাতে হাসপাতালটিতে সমস্যা অনেক। এক কথায় সমস্যার কথা বলে শেষ করা যাবেনা। একাধিক সমস্যার কিছুটা হলে সমাধান হলে রোগীরা অনেক বেশি সেবা পেত।
ডা. নাজনীন সুলতানা জানান, একদম অজোপারা গাঁয়ের মধ্যে সংকটময় মুহূর্তে রোগীকে সিজার করা মানে অনেক কিছু। যা ফটিকছড়িবাসির জন্যে অনেক সুখকর বটে। ই ও সি বিভাগে রোগীদের অনেক চাহিদা। কিন্তু রোগীর চাহিদা অনুপাতে যোগান নেই। ফলে অনেক সমস্যার মধ্যে আমাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের ইনচার্জ ডা. দেবাশীষ দত্ত জানান, ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের সাথে সংযোজিত ই ও সি বিভাগ অনেক ভাল একটা দিক। সমস্যা অনেক। আমি এই হাসপাতালের সু্ষ্ঠু চিকিৎসা সেবা অব্যহত রাখার লক্ষে যোগদানের পর হতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেক কাজ করেছি। তিনি ইতিপূর্বে ই ও সি বিভাগের বিভিন্ন সমস্যা লিখিত আকারে উপরস্থ মন্ত্রাণালয়ে প্রেরণ করেছেন বলেও জানান।
(Source: Dainik Purbokone) (Link:http://www.dainikpurbokone.net/index.php?option=com_content&view=article&id=67717:2013-02-25-19-43-57&catid=10:2011-05-26-03-33-49&Itemid=6)
|